https://ift.tt/2YZyjfK

ওয়াশিংটন, ০৯ ফেব্রুয়ারি – অল্প সময় বেশি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে রেকর্ড গড়লেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতো কম সময়ে আর কোনো প্রেসিডেন্ট এতো বেশি নির্বাহী পদক্ষেপ নেননি, যতোটা নিয়েছেন বাইডেন। ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে দ্বিদলীয় ঐক্যের ওপর জোর দিলেও পদক্ষেপ গ্রহণে মার্কিন সিনেটের ধীরলয়ের কারণে বাইডেন নিজের নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগ করছেন। এটি একই সঙ্গে নতুন প্রশাসনকে গতি দিলেও গণতান্ত্রিক কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বহু দিন থেকেই নতুন ক্ষমতা নেওয়া প্রেসিডেন্টরা একটি সংকটের মুখোমুখি হন। আর তা হলো, যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের দিক থেকে এক ধরনের কাঠামোগত বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। ফলে প্রশাসন সাজানোটা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টরা ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই কংগ্রেসের দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে অনেকটা একতরফাভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নেন। নির্বাহী আদেশ, স্মারক ও ঘোষণার মাধ্যমে নেওয়া এসব পদক্ষেপ নতুন প্রশাসনের গতিশীলতাকে নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপের কারণে সমালোচনার শিকারও হতে হয় প্রেসিডেন্টকে।

সংবাদমাধ্যম বিগত চার প্রেসিডেন্টের নেওয়া নির্বাহী পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেওয়া নির্বাহী পদক্ষেপগুলোর তুলনা করেছেন। বাইডেন মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রচুর নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা অন্য প্রেসিডেন্সিগুলোর পুরো মেয়াদকালের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে তুলনীয়।

আরও পড়ুন : ঠান্ডা যুদ্ধ থামানো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জীবনাবসান

বাইডেন মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রচুর নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা অন্য প্রেসিডেন্সিগুলোর পুরো মেয়াদকালের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। এ অবস্থায় রক্ষণশীলেরা অনুযোগ করছেন, বাইডেন নিজের বলা কথাই রাখছেন না। তিনি কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নিজের ক্ষমতাবলে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। রক্ষণশীলদের এই অনুযোগকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তবে এও সত্য, সিনেট অনেক ধীর গতিতে কাজ করছে। সিনেটে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানির কারণে বাইডেন মনোনীত আইনমন্ত্রী মেরিক গারল্যান্ডের নিয়োগ বিলম্বিত হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে এই মেরিক গারল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ আটকে দিয়েছিল রিপাবলিকান দল।

সংবাদমাধ্যম জানায়, সদ্য সাবেক হওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের বিভাজনের রাজনীতির পর এবার বাইডেন যে ঐক্যের ডাক দিলেন, তার মূলে ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে আগের অবস্থায় ফেরানোর প্রত্যয়। এ ক্ষেত্রে সব রিপাবলিকান নেতা তাঁর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন—এমন আশা তিনি করেননি। বরং ইউটাহ সিনেটর মিট রমনি ও মেইন অঙ্গরাজ্যের সিনেটর সুসান কলিন্সের মতো গুটিকয় রিপাবলিকান সিনেটরকে পাশে পাওয়ার আশাই প্রকাশ করেছিলেন তাঁর আহ্বানের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এই দুজন সিনেটরসহ ডেমোক্র্যাট সিনেটররা এখন পর্যন্ত বাইডেনকে এমন কোনো কিছু দিতে পারেননি, যাতে তিনি নির্বাহী পদক্ষেপের বদলে কংগ্রেসের ওপর আস্থা রাখতে পারেন। সামনে আছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের তৃতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ। এরই মধ্যে এই প্যাকেজ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। রিপাবলিকানদের প্রস্তাবে মাত্র ৬০ হাজার কোটি ডলারের কথা বলা হচ্ছে। ফলে করোনা পরিস্থিতি ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য বাইডেনের হাতে নির্বাহী পদক্ষেপই এখন একমাত্র বিকল্প।

বাইডেনের নির্বাহী পদক্ষেপগুলোর একটা বড় অংশই ট্রাম্প জমানার নির্বাহী আদেশগুলোকে বদলে দিতে নেওয়া। এরই মধ্যে মেক্সিকো সীমান্ত এলাকায় দেয়াল নির্মাণের লক্ষ্যে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই আদেশও ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এ ক্ষেত্রে কোনো কিছুর তোয়াক্কা তিনি করেননি। এখন ট্রাম্প জমানার পর যুক্তরাষ্ট্রকে নিজস্ব পথে ফেরানোর লক্ষ্যে বাইডেনকেও হাঁটতে হচ্ছে একই পথে। যে উদ্দেশ্যেই হাঁটুন না কেন, সত্য হচ্ছে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী পদক্ষেপই একটি প্রশাসনের কেন্দ্রে চলে আসছে। এটি মার্কিন গণতন্ত্রের চেহারা বদলে দিচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন এখন বেশ জোরালোভাবে উঠছে।

এ বিষয়ে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেনেথ লোয়ান্ড সিএনএনকে বলেন, নির্বাহী পদক্ষেপের সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এসব পদক্ষেপের ফল আসলে কী। এই পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়নে সময় লাগবে। এই পদক্ষেপগুলোর একটি অংশ আগে প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপের অধিকাংশেরই কার্যকারিতা বুঝতে এবং এগুলোর বাস্তবায়নে কয়েক মাস সময় বা তারও বেশি লাগতে পারে। বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত এগুলো শুধু কিছু কাগজ মাত্র।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ০৯ ফেব্রুয়ারি

সম্পুর্ন খবরটি পড়ার জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করুন ::১০ দিনেই নির্বাহী আদেশ জারি করে রেকর্ড গড়লেন বাইডেন! first appeared on DesheBideshe. February 09, 2021 at 10:07AM